প্রতিক্ষন সংবাদ: দেশে চালের ক্রেতা-ভোক্তারা আশা করেছিলেন, আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম কমবে। তাদের সে আশা শুধু অপূর্ণই থাকেনি, চালের দাম কমার বদলে বেড়েছে। চালের দামে ঊর্ধ্বগতির খবর পত্রপত্রিকায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়।
১৩ জানুয়ারি যুগান্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বস্তাপ্রতি (৭৫ কেজি) চালের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর প্রকারভেদে কেজিপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ৬ থেকে ১০ টাকা। বাজারে ধান-চালের দামে ঊর্ধ্বগতি রোধে ১৭ জানুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয় আহূত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত দেশের চালকল মালিক, আড়তদার, করপোরেট ও চালের পাইকারি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘এখন আমনের ভরা মৌসুম। এ সময়ে চালের দাম বাড়বে এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। মিলগেটে ২ টাকা দাম বাড়লে পাইকারি বাজারে ৬ টাকা কেন বাড়বে? অবৈধ মজুতকারী কিংবা অহেতুক দাম বাড়িয়ে দেওয়া ব্যবসায়ী কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।
বিনা লাইসেন্সে যারা ধানের স্টক করছেন, তারা কোনোভাবেই ছাড় পাবেন না। আবার যাদের করপোরেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারা ২-৩ টাকা খরচে প্যাকেট করে সুপারশপে ৮-৯ টাকা দাম বাড়িয়ে দেন। এটিও কোনোভাবে কাম্য নয়।’ তাদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘যেভাবে চারদিনের মধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে, ঠিক সেভাবে চারদিনের মধ্যে দাম কমিয়ে আনতে হবে।’
সভা অনুষ্ঠানের দুদিন পর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, চালের দাম প্রকারভেদে কেজিতে দেড থেকে তিন টাকা কমেছে। এ থেকে যে ধারণাটি বদ্ধমূল হয়ে ওঠে তা হলো, চালের বাজারে অর্থনীতির সাধারণ নিয়ম অকার্যকর।
অর্থনীতির সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, কোনো পণ্যের দাম সেটির চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ক দ্বারা নির্ধারিত হয়। চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কম থাকে, আর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকলে দাম বেশি থাকে। সম্প্রতি চালের দামে ঊর্ধ্বগতি এবং প্রশাসনের চাপে সামান্য নিম্নগতি থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী বাজারে চালের দাম নির্ধারিত হচ্ছে না। চালের দাম নির্ধারণ চালকল মালিক তথা চাল ব্যবসায়ীদের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। মূলত চালকল মালিকরা কীভাবে চালের বাজার নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন, তা আলোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।
এক. দুটি ঘটনা এবারের আমন মৌসুমে ধান-চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পেছনে প্রাথমিক ভূমিকা রেখেছে। গত ডিসেম্বরের ৭ থেকে ৯ তারিখে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত সরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) বার্ষিক সম্মেলনে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Leave a Reply