সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:২০ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
মাদারীপুরের শ্রীনদীতে সাংবাদিককে মাইরধোর করার দ্বায়ে পুলিশ প্রত্যাহার রাজশাহীর ৬ আসনে বৈধ ৩৭, বাতিল ১৭, অপেক্ষমাণ ৫ প্রার্থী ‘জাতীয় বেইমান’ চিহ্নিত হবে এই নির্বাচনে: এলডিপি টাকার মান দৌড়ানো গতিতে কমছে মাদারীপুরের রাজৈরে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সমবায় দিবস পালিত মাদারীপুরের রাজৈরে দুই সাংবাদিকের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন রাজশাহীর বাঘায় বিএনপি জামাতের হরতালে পুরলো পাইভেটকার  রাজশাহীতে মুঘল আমলের নারী মসজিদ বিলুপ্তির পথে এলাকাবাসীর দাবি পুনরায় সংস্কারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মাজারে রাজৈর উপজেলা সাংবাদিক ফোরামের নব নির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দের  শ্রদ্ধাঞ্জলি । আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটিতে রাজশাহীর দুই নেতা
 রাজশাহীতে মুঘল আমলের নারী মসজিদ বিলুপ্তির পথে এলাকাবাসীর দাবি পুনরায় সংস্কারের

 রাজশাহীতে মুঘল আমলের নারী মসজিদ বিলুপ্তির পথে এলাকাবাসীর দাবি পুনরায় সংস্কারের

তন্ময় দেবনাথ রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:- রাজশাহীর বাঘায় মুঘল স্থাপত্য রীতিতে তৈরি নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম নারী মসজিদ। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এ মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মুঘল ভাবধারার ছাপও সুস্পষ্ট। মসজিদের ভেতরে প্রবেশ পথের মূল দরজার ওপরে ফারসি ভাষায় পাথরে খচিত শিলালিপি নিয়ে রয়েছে লোমহর্ষক ঘটনা। মসজিদটি বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। পুনরায় সংস্কার করে মসজিদ চালুর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

রাজশাহী শহর থেকে ৪৯ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ কোনে বাঘা উপজেলা সদরে হযরত শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলার (রহঃ) পুত্র হযরত শাহ আবদুর হামিদ দানিশ মন্দ (রহঃ) মাজার সংলগ্ন এলাকায় এ মসজিদ অবস্থিত। পাশেই রয়েছে হযরত জহর শাহের (রহঃ) মাজার।

মসজিদ দেখতে বছরজুড়ে এখানে আসেন পর্যটক ও দর্শনার্থীরা। তবে পর্যটকদের আকর্ষণ ধরে রাখা বা ঐতিহ্যের সাক্ষী হিসেবে টিকে থাকা এ স্থাপনা সংরক্ষণে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।

৩ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের অবস্থান প্রায় ৩০ ফুট সুউচ্চ টিলার ওপর। বর্গাকার মসজিদটির দৈর্ঘ্য ২৭ ফুট, প্রস্থ ১৩ ফুট। চারপাশের দেয়াল ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি চওড়া। উত্তর ও দক্ষিণ লম্বাকৃতির মসজিদের পূর্বদিকে রয়েছে খিলান আকৃতির প্রবেশ পথ। মসজিদের ইট ধূসর বর্ণের। এ ইটের দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি, প্রস্থ ৬ ইঞ্চি এবং চওড়া দেড় ইঞ্চি। বর্তমান যুগের ইটের চেয়ে এর আকৃতি একেবারেই আলাদা। দর্শনার্থী ও নামাজিদের ওঠা-নামার জন্য মসজিদের পূর্বদিকে রয়েছে প্রবেশ পথ।তথ্যমতে, প্রায় ৫০০ বছর আগে ৫ জন সঙ্গীসহ সুদূর বাগদাদ থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য বাঘায় এসেছিলেন হযরত শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলা (রহঃ)। তিনি বসবাস শুরু করেন পদ্মা নদীর কাছে কসবে বাঘা নামক স্থানে। আধ্যাত্মিক শক্তির বলে এই এলাকার জনগণের মধ্যে ইসলাম প্রচারের ব্যাপক সাফল্য লাভ করেন। এ সময়ে শাহদৌলার অনেক অলৌকিক কীর্তি দেখে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা তার কাছে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেন।বাঘা ওয়াকফ এস্টেটের দেয়া তথ্যমতে, হযরত শাহদৌলার (রহঃ) পুত্র হযরত শাহ আবদুল হামিদ দানিশ মন্দের (রহঃ) মৃত্যুর পর তার তৃতীয় পুত্র মাওলানা শাহ আব্দুল ওয়াহাব (রহ.) বাঘার খানকার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ওই সময় দিল্লির সম্রাট শাহজাহানের প্রেরিত শাহী ফরমান যোগে ৪২টি মৌজা মাদদ মাস স্বরূপ দান লাভ করেন (১০৩০ হিজরি)। তখন শালিআনা ছিল ৮ হাজার টাকা।

হযরত আব্দুল ওয়াহাবের মৃত্যুর পর তার দুই পুত্রের মধ্যে হযরত শাহ মোহম্মদ রফিক (রহঃ)  ১০২৮ হিজরি সনে ২০৩৭ আনা শালিআনার সম্পত্তি ওয়াকফ করেন। ওয়াকফ এস্টেটের মুতওয়াল্লি (ষষ্ঠ রইশ) সাইজুল ইসলামের আমলে রইশ পরিবারের ও বাইরের পর্দানশিন মহিলাদের জন্য মসজিদ নির্মাণ করেন। তারা এ মসজিদে নামাজ আদায় করতেন।

ঐতিহ্যের সাক্ষী হিসেবে টিকে থাকা এই শৈল্পিক স্থাপনার শরীরজুড়ে এখন শুধুই অযত্ন আর অবহেলার ছাপ। মসজিদের দেয়ালের কিছু কিছু অংশের পলেস্তারা ধসে পড়েছে। তবে বর্তমানে এ মসজিদে আর নামাজ আদায় হয় না।প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে ঐতিহাসিক নিদর্শনের তালিকাভুক্ত করেছে। মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ ও পুরনো নকশা অক্ষুণ্ণ রেখে সংস্কারের দায়িত্ব এখন তাদের। তিনি জানান, মসজিদের ভেতরে প্রবেশ পথের উপরে ফারসি ভাষায় পাথরে খচিত শিলালিপিটি চুরি হয়ে যায়। যারা এ চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল, কিছুদিন পর প্রথম একজনের পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরে পাথরটি মসজিদের ভেতরে রেখে যায়। এরপর আরও একজন একইভাবে পঙ্গু হয়ে যায়। চিকিৎসায় পা কেটে ফেলেও ভালো হয়নি। পরে দুজনই মারা গেছে। তাদের জীবদ্দশায় পাথর চুরির ঘটনা তাদের মুখ দিয়েই বেরিয়ে আসে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021
Design & Developed BY Protikkhonsangbad