রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৬:০৬ অপরাহ্ন
প্রতিক্ষন সংবাদ: বৈজ্ঞানিক হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে কেবল শ্রীমঙ্গল আর ঈশ্বরদীতে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল শ্রীমঙ্গলে।আর ঈশ্বরদীতে ছিল ১০ ডিগ্রি। এছাড়া আর কোথাও শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে না। কিন্তু এরপরও অনুভূত হচ্ছে বেজায় শীত।শীতল সমীরণ, যা হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। ঢাকায় মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার শীতের অনুভূতিও বেশি ছিল। কনকনে শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।বিশেষ করে খেটে খাওয়া ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। শীত নিবারণে মানুষকে বিভিন্ন স্থানে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। পাশাপাশি বেড়েছে সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল-চাদর, মাফলার-কানটুপিসহ গরম জামা-কাপড়ের কদর। ফলে বাজারে গরম পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।কিন্তু এমন অবস্থা কেন-এই প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও তীব্র শীত অনুভবের কয়েকটি কারণ থাকতে পারে।
এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাতাসের গতি এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়া।
এছাড়া কুয়াশার প্রকোপ, সূর্যের স্বল্পস্থায়ী কিরণকাল কিংবা একেবারেই সূর্যের মুখ দেখতে না পাওয়ার ওপরও শীতের তীব্রতা নির্ভর করে।বাতাসের গতি বেশি থাকলেও শীতের অনুভূতি ও প্রকোপ বেশি মনে হয়। বর্তমানে প্রকৃতিতে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সাধারণত শীতে সবচেয়ে বেশি কাবু হয়ে থাকে বয়স্ক মানুষ এবং শিশুরা। অনেকেই এই সময়ে শীতজনিত ডায়রিয়া, সর্দি-জ্বর প্রভৃতিতে ভুগে থাকে। শীতের উল্লিখিত পরিস্থিতির মধ্যেই আবার বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে মৌসুমি লঘুচাপ। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের এই লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়া উপমহাদেশীয় উচ্চচাপবলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এসব বাহ্যিক কারণও শীতের অনুভূতি বাড়িয়ে দিয়েছে।
ট শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন এ তথ্য জানিয়েছেন। দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটের মাছ ব্যবসায়ী মোমিন সেখ বলেন, ভোর থেকে প্রচুর কুয়াশা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। মহাসড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে।সিলেট : সিলেট বিভাগজুড়ে লেগেছে পৌষের শীতের কাঁপন। বিশেষ করে মৌলভীবাজারের পাহাড়ি এলাকা ও সুনামগঞ্জের হাওড়াঞ্চলের অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। চা-বাগানের শ্রমিক, হাওড়াঞ্চলের জেলে, কৃষক ও শ্রমজীবী লোকজন শীত উপেক্ষা করেই সকালে কাজের তাগিদে ঘর থেকে বের হন। এসব শ্রমজীবী মানুষের খোঁজ নিচ্ছেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার থেকে শুরু করে সংসদ-সদস্যরাও ভুলে গেছেন তাদের এই দুর্ভোগের কথা। কিছু কিছু জনপ্রতিনিধি বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থা প্রদত্ত শীতবস্ত্র বিতরণে অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকলেও তারা নিজেদের উদ্যোগে কোথাও শীতবস্ত্র নিয়ে শীতার্তদের পাশে দাঁড়াননি।শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) : শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান জানান, বুধবার সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গলে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা?। এছাড়া শ্রীমঙ্গল ও আশপাশের এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের অভাবে নিম্ন-আয়ের মানুষসহ চা-বাগানের শ্রমিকরা কষ্টে আছেন।কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) : তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দীনমজুর ও নিম্ন-আয়ের মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে বোরো আবাদ। উপজেলার কুরপালা গ্রামের হালিম শিকদার বলেন, ভ্যান চালিয়ে আমি আমার সংসার চালাই। দুই দিন ধরে প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার কারণে ভ্যান চালাতে পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে আর দুই-একদিন পর আমার সংসার চালানো সম্ভব হবে না।
Leave a Reply